স্টাফ রিপোর্টার:
চট্টগ্রাম মহাসড়কে সক্রিয় একটি আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এবং ১ মার্চ ২০২৫ তারিখে চৌদ্দগ্রাম থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চট্টগ্রামমুখী লেনে দুটি পৃথক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। প্রথম ঘটনায় একজন কুয়েত প্রবাসী এবং দ্বিতীয় ঘটনায় একজন মালয়েশিয়া প্রবাসীর গাড়ি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়। উভয় ঘটনায় ডাকাতরা একই কৌশল অবলম্বন করে।
ঘটনাগুলোর প্রেক্ষিতে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা রুজু করা হয়। পুলিশ সুপার, কুমিল্লার নির্দেশনায় সহকারি পুলিশ সুপার চৌদ্দগ্রাম সার্কেল ও অফিসার ইনচার্জ চৌদ্দগ্রামের তত্ত্বাবধানে একটি চৌকস টিম গঠন করা হয়। টিমটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে। তাতে দেখা যায়, তিনটি ঘটনায় একই পিকআপ গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছে এবং ডাকাতরা একই দলের সদস্য।
তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে চৌকস পুলিশ দল কুমিল্লার চান্দিনা থানা এবং চাঁদপুরের কচুয়া থানা এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় ডাকাতি সংঘটনে ব্যবহৃত একটি পিকআপ গাড়ি, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র, লুণ্ঠিত মালামাল, অর্থ ও বৈদেশিক মুদ্রাসহ ৪ জন আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলার ২০ থেকে ২৫ জন ডাকাত ৩টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন সময়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি পরিচালনা করে। তারা বিমানবন্দর থেকে প্রবাসীদের গাড়ির তথ্য সংগ্রহ করে এবং মেঘনা টোল প্লাজা থেকে গাড়িগুলোর পিছু নেয়। নির্জন স্থানে পিকআপ দিয়ে গাড়ি ব্যারিকেড করে তারা দেশীয় ধারালো অস্ত্রের মুখে প্রবাসীদের জিম্মি করে তাদের সর্বস্ব লুট করে।
গ্রেফতারকৃত ডাকাতদের মধ্যে রয়েছেন:
১. মোঃ আব্দুল হান্নান (৩৫), পিতা-আব্দুল মান্নান, সাং-মনপুরা, থানা-কচুয়া, জেলা-চাঁদপুর।
২. মোঃ শরীফ হোসেন (৪৫), পিতা-মৃত সিরাজ মোল্লা, সাং-চরমোহনা (বাহাদুর বাড়ি), থানা-রায়পুর, জেলা-লক্ষীপুর।
৩. মোঃ আলাউদ্দিন (৩৫), পিতা-তাজুল ইসলাম, সাং-নুরপুর (দোলাই নবাবপুর), থানা-চান্দিনা, জেলা-কুমিল্লা।
৪. নজরুল ইসলাম (৬০), পিতা-মৃত হাজী রমিজ উদ্দিন, সাং-জোরপুকুরিয়া (জামিরাপাড়া ভূঁইয়া বাড়ি), থানা-চান্দিনা, জেলা-কুমিল্লা।
পুলিশ ডাকাতি সংঘটনে ব্যবহৃত নিম্নলিখিত মালামাল উদ্ধার করেছে:
একটি পিকআপ গাড়ি, দুইটি স্টিলের কিরিচ, দুইটি রামদা, একটি চাইনিজ কুড়াল, একটি দেশীয় কুড়াল, একটি লোহার শাবল, দুটি লোহার রড, একটি মোটা রশি।
এছাড়াও লুণ্ঠিত মালামালের মধ্যে রয়েছে:
১৬ কুয়েতি দিনার, ৮০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, বাংলাদেশী ৩,৫০০ টাকা, একটি বিদেশী কম্বল।
পুলিশের এই সফল অভিযানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতারকৃত অন্যান্য ডাকাতদের নাম暫時 প্রকাশ করা হয়নি।
Leave a Reply