ডেস্ক রিপোর্ট:
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের গণহত্যার বিচার না হলে শহীদদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমীর শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ২০২৪ সালের গণহত্যার বিচার অবশ্যই হতে হবে। প্রথমে অপরাধের বিচার, তারপর অন্যান্য কাজ। বিচার না হলে শহীদদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা হবে। যাদের রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলার, সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে চলার সুযোগ পেয়েছি, তাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারব না।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে কক্সবাজারে জেলা জামায়াত আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম, প্রচার সেক্রেটারি আল আমীনসহ একাধিক দায়িত্বশীলের সঞ্চালনায় কক্সবাজার সরকারি কলেজ মাঠে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
শফিকুর রহমান বলেন, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছিল। স্বাধীনতার পর অন্যান্য দেশ মাথা তুলে দাঁড়ালেও বাংলাদেশ কেবল পিছিয়েছে। কারণ দেশ স্বাধীন হলেও জনগণ প্রকৃত স্বাধীনতা পায়নি। বিভিন্ন সময় একটি দল দেশের জনগণকে পরাধীন করে রেখেছিল। এসব দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগই সবচেয়ে বেশি ফ্যাসিবাদী আচরণে দেশের মানুষকে ভোগান্তি দিয়েছে। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্বাচন আয়োজনের পূর্বে বিডিআর হত্যাসহ নানা অপকর্মে অভিযুক্ত শেখ হাসিনার বিচার শেষ করা এখন সময়ের দাবি।
জামায়াত আমীর বলেন, দিল্লিতে বসে শেখ হাসিনা ও বিদেশে বসে সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ ষড়যন্ত্র করছে। তাদের ফাঁদে পুলিশ বাহিনীকে পা না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, আমরাও কারো উস্কানিতে পা দেব না- তবে, বৈষম্যহীন ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত ছাত্র-জনতার সংগ্রাম শেষ হবে না।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দলের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, জামায়াতে ইসলামীতে ধর্মীয় ভেদাভেদ নেই, ধনী-গরিবের তফাত নেই। আওয়ামী নিষ্পেষণের শিকার সবাই শান্তির দল জামায়াতের পতাকাতলে আসছে। দেশ স্বাধীন হলেও ১৯৭২ সালের সংবিধান দাদাদের নির্দেশে গড়া। ফলে স্বাধীনতার সুফল পাওয়া যায়নি। পাঁচবার ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সাম্যের পরিবর্তে বৈষম্য ও বঞ্চনা উপহার দিয়েছে। শেখ মুজিব বিচারবহির্ভূত হত্যার সূচনা করেছিল। এর ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনা ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। সবকিছু লুটেপুটে খেয়েছে। ক্ষমতার পালাবদল হয়েছে, কিন্তু জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। ন্যায় বিচারের জন্য ন্যায়বান শাসক দরকার। আবু সাঈদ-মুগ্ধ যে পথ দেখিয়েছে, সেই পথে হেঁটে নিজেদের অধিকার আদায় করতে হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ধর্মের ট্রাস্টি পরিমল কান্তি বলেন, আমরা সৃষ্টির সেরা জীব। হিন্দু-মুসলিম দুজনের রক্ত একপাত্রে রাখলে আলাদা করা সম্ভব নয়। তাই শফিকুর রহমানের ভাষায় বলতে হয়, আমরা কোনো ধর্মের নয়, আমরা বাংলাদেশি। সারাদেশের ভিন্নধর্মীরা ইসলামকে সমীহ করে।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ আহসান উল্লাহ, চট্টগ্রাম মহানগর আমীর শাহজাহান চৌধুরী, সাবেক জেলা আমীর মোস্তাফিজুর রহমান, সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী, জেলা নায়েবে আমীর অ্যাড. ফরিদ উদ্দিন ফারুকী, জেলা সহ-সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু তাহের চৌধুরী, শামশুল আলম বাহাদুর, কর্মপরিষদ সদস্য শফিকুল হক জিহাদি, শহর আমীর আবদুল্লাহ আল ফারুক, সাবেক মেয়র সরোয়ার কামাল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. সলিম উল্লাহ বাহাদুর, শহিদুল আলম বাহাদুর প্রমুখ।
Leave a Reply