ডেস্ক রিপোর্ট:
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত, সমৃদ্ধ এবং সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন।
বাণীতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস উল্লেখ করেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের সহযোগীরা পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার পরিকল্পনা করে। এ লক্ষ্যে তারা বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে।
তিনি বলেন, বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে এসে স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশের শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, প্রকৌশলী, দার্শনিক এবং রাজনৈতিক চিন্তাবিদসহ মেধাবী সন্তানদের নির্মমভাবে হত্যা ও গুম করেছিল। এর মাধ্যমে তারা জাতিকে মেধাশূন্য করার জঘন্য ষড়যন্ত্র করেছিল।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, এই পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতাবিরোধীরা মহান মুক্তিযুদ্ধে তাদের পরাজয়ের জঘন্যতম প্রতিশোধ নেয়।
প্রসঙ্গত, নয় মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের শেষলগ্নে, যখন পুরো জাতি বিজয়ের প্রহর গুনছিল, তখন রাজাকার, আলবদর, আলশামস এবং শান্তি কমিটির সদস্যরা বুদ্ধিজীবী হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত হয়। এই নৃশংস হত্যা পুরো জাতিকে মর্মাহত করেছিল। দুই দিন পর, ১৬ ডিসেম্বর, পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করলে বাংলাদেশ স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতে ঘাতকরা কেবল ঢাকা শহরেই প্রায় দেড়শ বুদ্ধিজীবীকে চোখ বেঁধে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। সান্ধ্য আইন জারির মধ্যে তারা পরিকল্পিতভাবে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবীসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরের মেধাবী ব্যক্তিদের বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে। পরে তাদের হত্যা করে মরদেহগুলো ফেলে রাখা হয়।
পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুর ও রায়েরবাজারের বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যায় নিথর দেহ। তাদের কারও শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারও শরীরে ছিল অমানবিক নির্যাতনের চিহ্ন। অনেকের হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।
পরে জানা যায়, হত্যার আগে তাদের নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম, সংকলন এবং আন্তর্জাতিক পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, শহীদ বুদ্ধিজীবীর সংখ্যা ছিল প্রায় ১ হাজার ৭০ জন।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সরকারিভাবে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনও এ দিবসটি পালন করবে।
Leave a Reply